হার্ট অ্যাটাক হলে কী করবেন? হৃদরোগ থেকে বাঁচার করণীয় ও প্রতিরোধের উপায় জেনে নিন

মোঃ মাসুদ রানা
প্রকাশঃ ৫ জুলাই ২০২৫, ৯:৩৪ এএম

হৃদরোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়ে থাকে, কারণ এটি অনেক সময় উপসর্গ ছাড়াই শরীরকে আক্রান্ত করে ফেলে। তাই বয়স ত্রিশ পার হলেই সবাইকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। অনেক সময় পরিবারিক ইতিহাস থাকলে উত্তরাধিকার সূত্রেও হৃদরোগের আশঙ্কা থেকে যায়। তবে জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনলেই এই রোগ থেকে অনেকাংশে নিরাপদ থাকা সম্ভব।
হৃদরোগ প্রতিরোধে যা করবেন
১. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাটাহাটি, দৌড়, সাঁতার বা সাইকেল চালানো হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকলে রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
২. স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন
খাদ্য তালিকায় রাখুন ফল, সবজি, শস্যজাতীয় খাবার এবং মাছ। এড়িয়ে চলুন ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত চিনি ও লবণযুক্ত খাবার এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য।
৩. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
প্রতিদিন ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। ঘুমের ঘাটতি হৃদরোগসহ নানা জটিলতা তৈরি করতে পারে।
৪. ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন
ধূমপান ও অ্যালকোহল সরাসরি হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে। এই দুটি অভ্যাস পরিহার করলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
অতিরিক্ত ওজন হৃদরোগের একটি বড় কারণ। তাই সুষম খাদ্য ও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৬. মানসিক চাপ কমান
মানসিক চাপ হার্টের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যোগ, ধ্যান, এবং পছন্দের কাজ আপনার মানসিক প্রশান্তি আনতে সহায়ক হতে পারে।
৭. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন
বছরে অন্তত একবার রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও রক্তে সুগারের মাত্রা পরীক্ষা করুন। এতে হৃদরোগের পূর্বাভাস পাওয়া সহজ হয় এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।
৮. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
শরীর সুস্থ রাখতে ও হৃদরোগ প্রতিরোধে প্রতিদিন ৮–১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। এতে রক্ত সঞ্চালন ও হজম ভালো থাকে।
হার্ট অ্যাটাক হলে কী করবেন?
- রোগীকে শুইয়ে দিন এবং জিহ্বার নিচে একটি অ্যাসপিরিন দিন।
- সঙ্গে থাকলে একটি সরবিট্রেট ট্যাবলেটও দিতে পারেন।
- যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যান। কারণ প্রথম এক ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় হৃদপেশির।
হৃদরোগের জন্য উপযোগী খাবার
- আখরোট, ফল, সবজি এবং কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।
- তৈলাক্ত খাবার ও ভাজাপোড়া বর্জন করুন।
- রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে কোলেস্টেরল ও সুগারের মাত্রা নিয়মিত নজরদারিতে রাখুন।
হৃদরোগ প্রতিরোধে সচেতনতা ও সঠিক অভ্যাসই সবচেয়ে বড় ওষুধ। নিয়মিত জীবনযাপন, পরিমিত খাবার, মানসিক স্বস্তি এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা—এই চারটি জিনিস আপনাকে হৃদরোগমুক্ত সুস্থ জীবনের দিকে নিয়ে যাবে।
কফিপোস্টের সর্বশেষ খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল অনুসরণ করুন।
© কফিপোস্ট ডট কম
অনলাইনে পড়তে স্ক্যান করুন