চেলসির মুখোমুখি ফ্লুমিনেন্স, অদম্য মনোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব


চেলসির বিপক্ষে ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপের সেমিফাইনালে মাঠে নামার আগে নিজেদের ছোট দল বা ‘আন্ডারডগ’ ভাবনাটাই বেশ উপভোগ করছে ব্রাজিলের ফুটবল ক্লাব ফ্লুমিনেন্স। দলের প্রাণভোমরা ও কোচ রেনাটো গাউচো বলছেন, “আমরা যেন পুরো দুনিয়ার বিপক্ষে লড়ছি।” এই মানসিকতাই তাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দুর্দান্তভাবে।
রিও ডি জেনেইরোর এই ক্লাবটি যখন যুক্তরাষ্ট্রে খেলতে আসে, তখন পরিসংখ্যান বলেছিল—শিরোপা জেতার সম্ভাবনা মাত্র ০.০৫%। অনেকে তো ভেবেছিল, তারা গ্রুপ পর্বেই বাদ পড়ে যাবে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তারা গ্রুপ এফ থেকে দ্বিতীয় হয়ে শেষ ষোলোয় উঠে যায়। ডর্টমুন্ড ও মামেলোডি সান্ডাউন্সের সঙ্গে ড্র করে, আর উলসান হুন্ডাইকে হারিয়ে তারা পরের রাউন্ড নিশ্চিত করে।
মাত্র তিন মাস আগেও দলটি অবনমনের শঙ্কায় ছিল। কিন্তু ৬২ বছর বয়সী কোচ রেনাটোর সাহসী পরিকল্পনায় এখন তারা হয়ে উঠেছে বড় দল বধকারী। তার অধীনে তারা ইন্টার মিলান (চ্যাম্পিয়নস লিগ রানার্স-আপ) আর আল হিলালকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল পেরিয়ে এসেছে।
রেনাটো বলেন,
“আমি যখন বলি আমরা ‘কুৎসিত হাঁসের ছানা’, সেটা কাউকে অপমান করে বলছি না। বরং বলছি, আমরা আর্থিকভাবে অনেক পিছিয়ে। আমাদের ক্লাব বড় ক্লাবগুলোর তুলনায় মাত্র ১০ শতাংশ সমর্থন পায়। বড় দলগুলো দামী খেলোয়াড় নিতে পারে, আমাদের সেই সামর্থ্য নেই।”
তবুও তিনি মনে করেন, খেলোয়াড়দের মনোভাব, দৃঢ়তা আর কঠোর পরিশ্রম তাদের এতদূর নিয়ে এসেছে। “আমার দলের ছেলেরা মাঠে যেভাবে লড়াই করেছে, সেটাই আমাদের সেমিফাইনালে নিয়ে এসেছে।”
চেলসির বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে রেনাটোর ভাবনা বেশ কৌশলপূর্ণ। তিনি বলছেন, নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টুডিয়ামে স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় শুরু হওয়া এই ম্যাচ হবে ধৈর্যের পরীক্ষা। এটা হবে এক রকম দাবার খেলা। প্রচণ্ড গরমে বল দখলে না থাকলে দৌড়াতে দৌড়াতে দল ক্লান্ত হয়ে যাবে। তাই আমাদের বল নিজেদের দখলে রাখতেই হবে।
তার মতে,
“চেলসি খুব ভালো দল, আমরা তাদের সম্মান করি। তবে এই ম্যাচে সুযোগ কম থাকবে। যে দল ছোট ছোট তথ্য, কৌশল কাজে লাগাতে পারবে, জয়ও পাবে তারাই।”
অন্যদিকে, চেলসির কোচ এনজো মারেস্কা ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন,
“ব্রাজিলের খেলোয়াড়রা দারুণ মানসম্পন্ন। আমরা আগেই ফ্লামেঙ্গোর কাছে ৩-১ গোলে হেরেছি, আবার পালমেইরাসকে ২-১ গোলে হারিয়েছি। দুই ম্যাচেই ওদের ফুটবল মান ও শক্তির প্রমাণ পেয়েছি। কারণ ওরা এখন মৌসুমের মাঝখানে, ফিট এবং প্রাণবন্ত। আর ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো ক্লান্ত।”
আগামী মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে এই উত্তেজনাপূর্ণ সেমিফাইনাল ম্যাচ। এখন দেখার পালা, ফ্লুমিনেন্স কি পারবে আরেকটি চমক উপহার দিতে? ফুটবলভক্তরা অপেক্ষায়!
কফিপোস্টের সর্বশেষ খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল অনুসরণ করুন।
© কফিপোস্ট ডট কম
অনলাইনে পড়তে স্ক্যান করুন