KOFIPOST

KOFIPOST

ত্রাণ সংস্থার ঠিকাদাররাও ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের গুলি করেছে: বিবিসি

ডেস্ক রিপোর্ট
অ+
অ-
ত্রাণ সংস্থার ঠিকাদাররাও ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের গুলি করেছে: বিবিসি

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গঠিত মানবিক সহায়তাদানকারী সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ঘিরে বিতর্ক ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সংস্থাটির সাবেক নিরাপত্তা ঠিকাদার অভিযোগ করেন, গাজায় সংস্থার ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনী ক্ষুধার্ত বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায়।


সাবেক ওই নিরাপত্তাকর্মীর দাবি, একাধিক ঘটনায় নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের ওপর মেশিনগান ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি একটি নির্দিষ্ট ঘটনার উল্লেখ করে জানান, কেবল ত্রাণকেন্দ্র ত্যাগে দেরি হওয়ার কারণে একদল নিরস্ত্র মানুষের ওপর গুলি চালানো হয়। এমনকি ঘটনাস্থলে উপস্থিত অপর এক ঠিকাদার এ হামলার পর সহকর্মীর প্রতি বলেন, দারুণ! মনে হচ্ছে তুমি একটা স্কোর করেছ! এরপর তারা এ ঘটনা নিয়ে হাসাহাসি করতে শুরু করে।’


ওই নিরাপত্তাকর্মী জানান, ঘটনাটি লিখিতভাবে জিএইচএফ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা কোনো গুরুত্ব দেয়নি। বরং বিষয়টিকে অস্বীকার করে দাবি করে, হয়তো আহত ব্যক্তি ক্লান্ত হয়ে পড়ে গিয়েছিল। সংস্থাটি বিবিসিকে জানায়, তাদের ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার কোনো ঘটনাই ঘটেনি।


২০২৫ সালের মে মাসে গাজায় কার্যক্রম শুরু করে জিএইচএফ। মূলত দক্ষিণ ও মধ্য গাজায় তাদের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তবে শুরু থেকেই সংস্থাটিকে ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, সংস্থাটি বাস্তবে ইসরায়েলি দমননীতি চালিয়ে যাওয়ার একটি ছদ্মবেশ মাত্র। তাদের ভাষ্য, খাবারের আশায় প্রতিদিন শত শত ফিলিস্তিনিকে যুদ্ধক্ষেত্রের মুখোমুখি করা হচ্ছে।


জিএইচএফের সাবেক কর্মীর অভিযোগ, সংস্থার অভ্যন্তরে নিয়ন্ত্রণহীন পরিবেশ বিরাজ করছে। তিনি বলেন, “ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে কোনো স্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। বরং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলতেন, যদি কাউকে হুমকি মনে হয়, তাহলে সরাসরি গুলি করো—পরে ব্যাখ্যা দেওয়া যাবে।”


তিনি আরও জানান, প্রতিটি সাইটে সিসিটিভি থাকলেও এসব ঘটনার কোনো দায় স্বীকার করে না জিএইচএফ। বরং সংস্থাটির ভাষ্য, “এ ধরনের কিছু ঘটেনি।”


এদিকে, ১৭০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ও এনজিও—including Oxfam ও Save the Children—জিএইচএফের কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, ত্রাণ নিতে আসা নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর নিয়মিতভাবে গুলি চালানো হচ্ছে।


জিএইচএফ অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যে ৫ কোটি ২০ লাখ খাবার বিতরণ করেছে এবং কঠোর ব্যবস্থাপনার কারণেই ত্রাণ সঠিকভাবে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। অন্য সংস্থাগুলোর সমালোচনায় তারা বলছে, দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে তাদের ত্রাণ লুট হয়ে যায়।


ইসরায়েলি বাহিনীও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা কেবল সম্ভাব্য হুমকি সৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের লক্ষ্য করেই হামলা চালায়। তবে, মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভাষ্যে, বাস্তবে তা হচ্ছে না।

ট্যাগস:

গাজাফিলিস্তিনমধ্যপ্রাচ্যগণহত্যা

কফিপোস্টের সর্বশেষ খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল অনুসরণ করুন।

© কফিপোস্ট ডট কম

অনলাইনে পড়তে স্ক্যান করুন