ইন্দোনেশিয়ায় জনপ্রিয় অ্যানিমে সিরিজ ‘ওয়ান পিস’-এর জলদস্যু পতাকা হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক প্রতিবাদের প্রতীক


ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা দিবস ঘিরে সারা দেশের রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর লাল-সাদা জাতীয় পতাকায় সজ্জিত হয়। তবে এ বছর সেই জায়গায় দেখা যাচ্ছে জাপানি জনপ্রিয় অ্যানিমে ওয়ান পিস এর কালো পতাকা, যাতে খড়ের টুপি পরা একটি খুলি আঁকা। এই পতাকাটি সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই ব্যবহার করছেন সরকারের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশের প্রতীক হিসেবে।
একজন এক্স (সাবেক টুইটার) ব্যবহারকারী লিখেছেন, “লাল-সাদা পতাকা আমাদের কাছে এতটাই পবিত্র যে এখনই তা উড়ানো সম্ভব নয়, কারন জনগণ ক্ষমতাসীনদের দ্বারা এখনো দমন পীড়নের শিকার।” তিনি আরও জানান, ওয়ান পিস পতাকা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক।
সামাজিক মাধ্যমে হাজারো মানুষ এই মতের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। এমনকি কেউ কেউ স্বাধীনতার ৮০তম বার্ষিকীর লোগোও ওয়ান পিস পতাকার ধরনে পুনর্নির্মাণ করেছেন।
এ ঘটনার পর সরকার ও পার্লামেন্ট কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা এই পদক্ষেপকে “উস্কানিমূলক” ও জাতীয় ঐক্য ভাঙার প্রচেষ্টা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। পার্লামেন্টের উপ-স্পিকার সুফমি দাসকো আহমাদ বলেছেন, নিরাপত্তা সংস্থার কাছে তথ্য আছে যে “ওয়ান পিস আন্দোলনের” মাধ্যমে সুসংগঠিতভাবে দেশকে বিভক্ত করার চেষ্টা চলছে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সমন্বয়মন্ত্রী বুদি গুনাওয়ান সতর্ক করে বলেন, স্বাধীনতা দিবসে ওয়ান পিস পতাকা উত্তোলনের ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি ২০০৯ সালের জাতীয় পতাকা আইনের কথা উল্লেখ করে বলেন, জাতীয় পতাকার অবমাননা অপরাধ।
তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো সরকারের এই অবস্থানকে সমালোচনা করেছে। ইন্দোনেশিয়ান লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশনের মুহাম্মদ ইসনুর বলেন, লাল-সাদা পতাকার নিচে ওয়ান পিস পতাকা থাকলে এর মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। বরং এটি দেশের প্রতি ভালোবাসা ও গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের প্রতীক, দেশদ্রোহিতার নয়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, জনপ্রিয় অ্যানিমের এই পতাকা আসলে ঠিক সেরকমই, যেমন মানুষ প্রিয় কোনো সামাজিক সংগঠন বা ফুটবল ক্লাবের পতাকা উড়ায়। এমনকি বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট গিবরান রাকাবুমিং রাকা নিজেও নির্বাচনী প্রচারণার সময় ওয়ান পিসের ল্যাপেল পিন পরে জনসভায় অংশ নিয়েছিলেন।
কফিপোস্টের সর্বশেষ খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল অনুসরণ করুন।
© কফিপোস্ট ডট কম
অনলাইনে পড়তে স্ক্যান করুন