কম্পিউটারের উল্থান থেকে ভবিষ্যৎ যাত্রা, কোথায় যাচ্ছি আমরা


মানবসভ্যতার ইতিহাসে প্রযুক্তির উন্নয়ন সবচেয়ে বড় রূপান্তর ঘটিয়েছে কম্পিউটার। এক সময় মানুষ হিসাব-নিকাশ করত হাতে বা কাগজে কলমে। পরে আবিষ্কৃত হলো সাধারণ ক্যালকুলেটর। সেখান থেকে ধীরে ধীরে তৈরি হলো আধুনিক কম্পিউটার, যা আজ আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
কম্পিউটারের উল্থান শুরু হয়েছিল বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে। প্রথমদিকে এটি ছিল বিশাল আকৃতির মেশিন, যার কাজ ছিল শুধুমাত্র বড় বড় গণনা করা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কোড ভাঙতে যে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়েছিল, তার আকার ছিল প্রায় একটি ঘরের সমান। অথচ সেই কম্পিউটারের ক্ষমতা আজকের একটি স্মার্টফোনের কাছাকাছিও নয়।
বর্তমান সময়ে কম্পিউটার শুধু গণনার যন্ত্র নয়, বরং এটি শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা, বিনোদন থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অপরিহার্য অংশ। এখন অনলাইন ক্লাস থেকে ই-কমার্স, হাসপাতালের রোগী ব্যবস্থাপনা থেকে ব্যাংকিং- সব জায়গাতেই কম্পিউটারের ভূমিকা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। যেমন, মহাকাশ গবেষণায় ব্যবহৃত সুপারকম্পিউটার সেকেন্ডে কোটি কোটি ডেটা বিশ্লেষণ করতে পারে, যা মানুষ হাতে করলে হয়তো শত বছর লেগে যেত।
ভবিষ্যতের কথা ভাবলে বোঝা যায়, কম্পিউটার আরও উন্নত হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইতিমধ্যেই আমাদের সামনে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, স্মার্ট রোবট, এমনকি চিকিৎসা ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ে এআই ব্যবহার হচ্ছে। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, ভবিষ্যতের কম্পিউটার মানুষের মস্তিষ্কের মতোই শিখতে পারবে এবং সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবে। তবে এই উন্নতির সঙ্গে কিছু চ্যালেঞ্জও আসছে। যেমন, মানুষের চাকরি হারানোর ভয় কিংবা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার হুমকি।
সব মিলিয়ে বলা যায়, কম্পিউটারের উল্থান শুধু প্রযুক্তির গল্প নয়, বরং মানবসভ্যতার এক অভূতপূর্ব রূপান্তরের ইতিহাস। বর্তমানের সুবিধা উপভোগ করার পাশাপাশি আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে ভবিষ্যতের জন্যও, যাতে এই প্রযুক্তি আমাদের কল্যাণে আসে এবং আমরা সঠিকভাবে এর সদ্ব্যবহার করতে পারি।
কফিপোস্টের সর্বশেষ খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল অনুসরণ করুন।
© কফিপোস্ট ডট কম
অনলাইনে পড়তে স্ক্যান করুন