মুসলিম মেয়ে আনলে চাকরির প্রতিশ্রুতি, বিজেপি প্রাক্তন বিধায়কের বক্তব্যে তোলপাড়

ভারতের উত্তর প্রদেশের দোমারিয়াগঞ্জ থেকে নির্বাচিত প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক রঘবেন্দ্র প্রতাপ সিং ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে তিনি জনসমাবেশে বলেন, যে হিন্দু যুবক মুসলিম মেয়ে নিয়ে আসবে তার জন্য চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। এই মন্তব্যকে অপহরণ এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণকে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তুলে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে এবং এতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। খবর: মুসলিমমিরর

মুসলিম বিরোধী বক্তব্যের জন্য পরিচিত রঘবেন্দ্র প্রতাপ সিং ওই ভিডিওতে স্পষ্টভাবে বলেন, যে হিন্দু ছেলে একজন মুসলিম মেয়েকে নিয়ে আসবে তার জন্য চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। জনসভায় উপস্থিত জনতা এই মন্তব্যে করতালি দিয়ে সমর্থন জানায় বলে জানা গেছে। তবে এই বক্তব্য অপরাধমূলক কার্যকলাপ এবং সাম্প্রদায়িক বিভেদকে উৎসাহিত করার জন্য তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে।

স্থানীয় কর্মী এবং বিরোধী দলীয় নেতারা এই বক্তৃতাকে একটি বিপজ্জনক উসকানি হিসেবে চিহ্নিত করে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। আম আদমি পার্টির জাতীয় মুখপাত্র সঞ্জয় সিং এক্স সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্টে এই মন্তব্যকে অপরাধের সরাসরি প্ররোচনা হিসেবে নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি উত্তর প্রদেশ পুলিশের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের সমালোচনা করে বলেন, মুসলমানদের ক্ষেত্রে ছোটখাটো বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলেও হিন্দু নেতাদের এমন উসকানিমূলক বক্তব্য উপেক্ষা করা হয়।

সঞ্জয় সিং তাকে এখনই গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়ে বলেন, না হলে সমান বিচারের দাবি ফাঁপা বুলি হয়ে থাকবে। তিনি সামাজিক প্রভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলে বলেন, কোন হিন্দু বাবা-মা চাইবে তাদের ছেলে একটি মেয়েকে অপহরণ করার জন্য পরিচিত হোক? বিশ্বজুড়ে হিন্দু ধর্মের এমন পরিচয় আমরা চাই কি?

মানবাধিকার আইনজীবীরা প্রথম তথ্য প্রতিবেদন বা এফআইআর দায়েরের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন, অপহরণ এবং ঘৃণা ছড়ানোর মতো ধারায় অভিযোগ আনা সম্ভব। জেলা প্রশাসনকে তারা সাম্প্রদায়িক অশান্তি রোধ করতে এবং সম্ভাব্য শিকারদের সুরক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছেন।

এই ঘটনা বিরোধী দলগুলোর দীর্ঘদিনের অভিযোগকে আরও শক্তিশালী করেছে যে উত্তর প্রদেশ কর্তৃপক্ষ নির্বাচনী আইন প্রয়োগ করে। তাদের অভিযোগ, মুসলমানদের প্রায়ই লক্ষ্যবস্তু বানানো হয় অথচ হিন্দুত্ববাদী ব্যক্তিদের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড উপেক্ষা করা হয়।