KOFIPOST

KOFIPOST

"সরকারি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ধীরগতি, পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের হতাশা"

রাফসান শাকিল
রাফসান শাকিল

প্রকাশঃ ২৪ জুলাই, ২০২৫, ৯:৩৮ পিএম

অ+
অ-
"সরকারি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ধীরগতি, পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের হতাশা"

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পিবিএস) এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ও পেশাগত সংকট নিরসনে সরকার গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদন আট মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও জমা দেওয়া হয়নি। এর ফলে পেশাগত অনিশ্চয়তা, সিদ্ধান্তহীনতা ও দায়িত্বজটিলতায় দিন কাটছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশন বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।


সংগঠনটি জানায়, দীর্ঘদিন ধরে আরইবি-পিবিএস ব্যবস্থাপনায় সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশন। সরকারের পক্ষ থেকে লিখিত আশ্বাস পাওয়ার পর ২০২৪ সালের ৫ জুন আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, বিদ্যুৎ বিভাগের মাধ্যমে সমস্যাগুলোর সমাধানে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এরপর গত ১৭ জুন বিদ্যুৎ বিভাগ দুটি পৃথক কমিটি গঠন করে। একটি কমিটির কাজ ছিল আরইবি ও পিবিএস-এর একীভূতকরণ বা অন্যান্য বিতরণ সংস্থার মতো কোম্পানি গঠনের সম্ভাব্যতা যাচাই ও সুপারিশ করা। অপর কমিটি গঠিত হয় চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ, চলমান মামলাগুলো প্রত্যাহার, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল, সাময়িক বরখাস্তকৃত এবং সংযুক্ত কর্মীদের পদায়নসহ অন্যান্য পেশাগত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে।

কিন্তু অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, আন্দোলন স্থগিত হওয়ার পর দুই মাস অতিক্রান্ত হলেও সহজ ও অগ্রাধিকারযোগ্য বিষয়গুলোতেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। বিশেষ করে মামলা প্রত্যাহার, চাকরিচ্যুত লাইনক্রুদের পুনর্বহাল, হয়রানিমূলক বদলি স্থগিত, অনিয়মিত ও চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ, সংযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্তদের পদায়নের মতো বিষয়গুলোতে এখনো কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

এছাড়া, আন্দোলনের সময় কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায় পাঁচজন লাইনক্রু সমস্যার মুখে পড়লেও তাদের বিষয়টিও এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। এসব বিষয়ের দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ১৯ জুন এবং ১ জুলাই যথাক্রমে দুই দফায় লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশন আরও জানায়, সহজেই সমাধানযোগ্য বিষয়গুলোর দীর্ঘসূত্রতা শুধু হতাশাই বাড়াচ্ছে না, বরং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও পেশাগত অনাস্থা তৈরি করছে। চলমান অবস্থায় কর্মীদের অসন্তোষ প্রশমিত করা এবং সমিতিগুলোর স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বজায় রাখতে হলে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

বিবৃতিতে বলা হয়, অনিয়মিত শ্রমিকদের চাকরি নিয়মিতকরণ, বদলির আদেশ পুনর্বিবেচনা, মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি এবং বরখাস্ত/চাকরিচ্যুত কর্মীদের পুনর্বহালের মতো কার্যক্রম চলতি জুলাই মাসের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় মাঠপর্যায়ে নতুন করে অস্থিরতা ও আন্দোলনের আশঙ্কা বাড়বে।

পাশাপাশি হয়রানির উদ্দেশ্যে পরিচালিত আরইবি’র ছয় ধরনের অডিটিং প্রক্রিয়া স্থগিত রেখে সরকারের অন্যান্য নিরপেক্ষ অডিট কার্যক্রম চালু রাখার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। তারা মনে করে, স্থায়ী সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত অডিট ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখা প্রয়োজন।

ট্যাগস:

পল্লী বিদ্যুৎ

কফিপোস্টের সর্বশেষ খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল অনুসরণ করুন।

© কফিপোস্ট ডট কম

অনলাইনে পড়তে স্ক্যান করুন