৭০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা শিক্ষক নিয়োগ পেলেন অধ্যক্ষ, সমালোচনার ঝড়

তিতুমীর কলেজের জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলনে ৭০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী শিক্ষক মালেকা আখতার বানু এবার নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যক্ষ হিসেবে। তাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।

গত ২ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি হওয়া এক অফিস আদেশে এই নিয়োগের বিষয়টি জানানো হয়। খবরটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা এই নিয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং তাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে।

জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই তিতুমীর কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক মালেকা বানু বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৭০০ শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়। এজাহারে বলা হয়, একই বছরের ১৮ জুলাই সরকারি ছুটি থাকায় কলেজ ও ছাত্রাবাস বন্ধ ছিল। সেই সন্ধ্যায় অজ্ঞাতনামা বিএনপি, জামায়াত ও শিবিরের দুষ্কৃতকারীরা কলেজে হামলা চালায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খন্দকার সাইমা সুলতানা জানান, “আমরা চাই না, যিনি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, তিনি আমাদের অধ্যক্ষ হন। এটা আমাদের জন্য অপমানজনক।”

আরও এক শিক্ষার্থী সাদেকুর নাহার কবিতা বলেন, “আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে এমন একজন অধ্যক্ষকে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী বলেন, “ফ্যাসিবাদের সহযোগী কাউকে আমরা মেনে নেব না। এই নিয়োগ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, নইলে জেলা ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে নামবে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি বায়েজিদুর রহমান সিয়াম বলেন, “আমরা দ্রুত জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দেব এবং আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করব।”

শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মেহেরুন্নেছা মুনিয়া জানান, “তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলে তাকে একদিনের জন্যও অফিস করতে দেওয়া হবে না।”

অন্যদিকে, নিয়োগ পাওয়া মালেকা আখতার বানু জানান, “সেই সময় কেউ মামলা করতে রাজি হচ্ছিল না। তখন অধ্যক্ষের কথায় এবং সরকারের নির্দেশনায় আমি দায়ভার নিয়েছিলাম। আমি জানতাম না, শিক্ষার্থীরাই মামলার আসামি। আমি একজন শিক্ষক এবং মা হিসেবে কখনোই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে থাকতে পারি না। পরে আমি মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছি।”